
বাসাইল সংবাদ: সোমবার, ০৮ জানুয়ারি, ২০১৮:

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুইজনের বাড়ি টাঙ্গাইলে। নিহত দুইজনের বাড়িতেই এখন চলছে শোকের মাতম। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা দিশেহারা। তাদের লাশ ফিরে পাবেন কিনা এ নিয়ে শংকায় ভুগছেন পরিবারের লোকজন। নিহত এই দুইজনের মৃতদেহ দ্রুত ফিরে পাবার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। ক্ষতিগ্রস্থ এ পরিবার সরকারের কাছে আর্থিকভাবে সহযোগিতারও আবেদন জানিয়েছেন ।
নিহত দুইজন হলেন-টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের আব্দুর রহিম মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (৩২) এবং কালিহাতী উপজেলার কস্তুরিপাড়া এলাকার হামেদ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৫)।
দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের নিহত আমিন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তানকে হারিয়ে মা পাগলপ্রায়। নিহত আমিনুরের স্ত্রী বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। এলাকাবাসী তাদের শান্তনা দিচ্ছেন।

নিহত আমিন মিয়ার পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নিহতের বাবা আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি খুব অসহায় মানুষ। ধার -দেনা করে ছেলেকে গত নভেম্বরে সৌদি পাঠিয়েছি। আমার এখন কোন সহায়-সম্বল কিছু রইল না। সরকারের কাছে একটাই আবেদন করি আমার ছেলেকে যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে দেয়। আমি আর কিছু চাই না। ছেলের লাশ দেখতে না পারলে আমার বেঁচে থেকে কি লাভ।
নিহতের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার বলেন, মাত্র দুই বছর আগে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। সংসারের অভাব অনটন দেখে সংসারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য সে গত ১ নভেম্বর সৌদি আরবে গিয়েছিল । কিন্ত এভাবে তার করুণ মৃত্যু হবে এটা ভাবতে পারি নাই। এখন আমি কি করবো, কোথায় যাবো।
মা আঙ্গুরি বেগম আমার বাবা কই গেল বলে কান্না করছিলেন আর বার বার ছেলেকে খুঁজছিলেন। আর বলছিলেন. এখন আমি কি করমু। আমার ছেলেকে ফিরিয়ে এনে দাও। আমি আমার বাবাকে দেখতে চাই।
ডুবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমিনের পরিবারটি খুবই হত দরিদ্র। তাদের বাড়ি ভিটা ছাড়া আর কিছু নাই। তার বাবা অন্য মানুষের জমিতে বর্গাচাষী হিসেবে কাজ করে থাকেন। ছেলেকে ধার দেনা করে বিদেশ পাঠিয়েছিল। এই পরিবারটিকে আমি আর্থিকভাবে সহায়তার দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে উপজেলার কস্তুরিপাড়া এলাকার আব্দুল হামিদ আলীর ছেলে শফিকুল সিকদারের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম।
হত-দরিদ্র পরিবার শফিকুলকে হারিয়ে হতাশায় পড়েছে।
দেড় বছর আগে সৌদি গেলেও ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি শফিকুল। জমাজমি বিক্রি করে শফিকুলকে সৌদি পাঠিয়ে পরিবার এখন নি:স্ব। শফিকুল দুই কন্যা সন্তানের জনক।
নিহত শফিকুলের বাবা-মাসহ স্বজনরা লাশের পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।
বাসাইলসংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন