
প্রায় ১৫টি গ্রামের যোগাযোগ বন্ধ

বাসাইল সংবাদ: সোমবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৮:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি সেতু। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সেতুটি উদ্বোধনের আগেই ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আর এর জন্যে বাসাইল প্রকল্প কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। এরমধ্যে বাসাইল উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সাতটি সেতু রয়েছে। সাতটি সেতুর মধ্যে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকি তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ি রাস্তার নিরাইল টেংরাখালী সেতুর কাজ পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি প্রায় তিন মাস আগে সমাপ্ত হয়। সেতুটি নির্মাণের সময়েই রড, সিমেন্ট ও বালুসহ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানায় বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের কাছেও। কিন্তু ওই কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।
স্থানীয় বাবুল মিয়ার অভিযোগ সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে দেখা যায়নি। সে সময় ধান কাটা শ্রমিকদের দিয়ে সেতুর কাজ করতে দেখা যায়। এসব অনিয়মের ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তাকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। একই অভিযোগ স্থানীয় অনেকের। তাদের অভিযোগ প্রকল্প কর্মকর্তার উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণেই সেতুটির এই অবস্থা। স্থানীয় প্রায় ১৫টি গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ চলে আসছে। সেতুটি হেলে গিয়ে ধ্বসে পড়ার আশংকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। তাদেরকে এখন প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে।
ফুলকি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, সেতুটি হেলে পড়ার কারণে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ এলাকা দিয়ে বর্ষা মৌসুমে কয়েকটি গ্রামের পানি নিষ্কাশন হয়। অতিদ্রুত সেতুটি ভেঙে সেতুটির দৈর্ঘ্য আরো বড় করার দাবি জানান তিনি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতের কারণে সেতুটি হেলে পড়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই প্রকল্প অফিসের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পরিদর্শন করে গেছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার জাহিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার স্বপ্না তদন্তপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন