রেজাউল করিম : ÔThink Positive, Be Positive’. এমনটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিৎ। অথচ সারাজীবন নিজের চেহারার ধুলো না মুছে কেবল আয়না মুছে যাচ্ছি। একটু ইতিবাচক মন্তব্যের অভাবে একজন পরিশ্রমী মানুষের সফলতা আটকে যেতে পারে। আবার একটু ইতিবাচক মন্তব্যে কেউ কেউ সফলতার চূড়ায় পৌঁছে যায়। এমন ইতিবাচক ভাবনার বড় অভাব। বলতে চাচ্ছি হিরো আলমের কথা। যাকে নিয়ে সমাজ প্রতিনিয়ত ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে যাচ্ছে। আধুনিক ট্রোলের শিকার হচ্ছে গ্রাম থেকে উঠে আসা হিরো আলম। বিষয়টি তিনিও জানেন। না চেহারা, না শারিরীক গঠন। না শিক্ষা, না কথা বলার বচন-ভঙ্গি। এসব নিয়ে সমাজ তাকে ট্রোল করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রোলের কারণেই তিনি এখন অন্যতম পরিচিত মুখ। আমি এর উল্টোটা ভাবছি। এতো ট্রোলের পরেও তিনি লড়ে যাচ্ছেন। বলা যায় লড়ে যাওয়া হিরো। হিরো হতে এটাই বা কম কিসের। নানা সময়ে নানা কারণে হিরো আলম হয়েছেন আলোচনা-সমালোচনার বিষয়। কেউ ইতিবাচক ভাবছেন আবার কেউ নেতিবাচক ভাবছেন। শেষ কর্ম থেকেই আসা যাক।
সর্বশেষ বগুড়া-৪ ও বগুড়া-৬ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন তিনি। কোন কোন গণমাধ্যম অনেকটা নিশ্চিত হয়েছিল এবার এমপি হচ্ছেন হিরো আলম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঘোষণা এলো, বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন তিনি। আলমের অভিযোগ, ‘বগুড়া-৪ আসনে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। তবে ফলাফলে গন্ডগোল করেছে। নির্বাচন কমিশন আমার বিজয় ছিনতাই করে প্রতিপক্ষকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। এরপর হিরো আলমের পক্ষ থেকে এলো আরও জোড়ালো বক্তব্য । বললেন,‘আমাকে স্যার ডাকতে হবে বলে শিক্ষিত মানুষ আমাকে ভোটে হারিয়ে দিয়েছে।’ বক্তব্যটির সত্য মিথ্যে যাচাই করতে যাব না। তবে কথাটা বিদারক। যেহেতু নির্বাচনী আইনে শিক্ষার বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা আগেও এমপি প্রার্থীদের নির্বাচনী হলফনামায় দেখেছি কেউ কেউ স্বশিক্ষিত। সেক্ষেত্রে হিরো আলমের যোগ্যতা নিয়ে সমালোচনার সুযোগ নেই। এছাড়া গায়ক-গায়িকা-নায়িকা, নাট্যকর, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এমন কি খেলোয়ার বিগত দিনে সাংসদ হয়েছেন। তখন কিন্তু কারও যোগ্যতা নিয়ে আলোচনা উঠেনি। তবে আলমের যোগ্যতা নিয়ে এতো আলোচনা কেন? দেশীয় পরিস্থিতির কথা তুলে রাজনীতিকে বিতর্কে ফেলব না। বিশে^র সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রপ্রধানের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা অতি সাধারণ থেকে দেশের সর্বোচ্চ চেয়ারে বসেছেন। আমেরিকার এক রাষ্ট্রপতি প্রথম জীবনে বাদাম বিক্রি করতেন, তা নিয়ে গর্বের শেষ নেই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চা বিক্রি করতেন, তাও তাদের কাছে গর্বের। নায়ক রাজ্জাকের ঢাকা শহরে থাকার জায়গা ছিল না, সেটাও চলচ্চিত্র শিল্পীদের প্রেরণা। সমস্যা সিডি বা ডিশ ব্যবসায়ী হিরো আলমের ক্ষেত্রে। তিনি কেন মিউজিক ভিডিও বানাবেন, নিজেকে কেন হিরো দাবি করবেন? তিনি কেন সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হবেন? এসব দাবি কতোটা যোক্তিক?
মার্কিন রাষ্ট্রপতিরা হন বিশ্বরাজা। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, তাদের শুরুটাও ছিল তিক্ত অভিজ্ঞতার। তাঁদের কাছে সেই অভিজ্ঞতাগুলো ছিল অনুপ্রেরণার। দেখা যাক জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, বারাক ওবামাসহ মার্কিন প্রেসিডেন্টের জীবনের প্রথমে কি কাজ করতেন। আমেরিকান স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে কৃষক পরিবারের জর্জ ওয়াশিংটন ভূমি জরিপের কাজ করতেন। মাসাচুসেটসের হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির এক অনলাইন পোস্ট থেকে জানা যায়, জন অ্যাডামের ব্যক্তিগত দিনলিপিতে লেখা ছিল, তিনি স্কুলমাস্টার ছিলেন। এসময় তিনি আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভুগছিলেন। নির্বিঘ্নে নিজের পড়াশোনা ও লেখালেখি করার জন্য মাঝেমাঝে অ্যাডাম নিজে ক্লাস না নিয়ে কোনো মেধাবী ছাত্রকে দিয়ে ক্লাস নেওয়াতেন। ভার্জিনিয়া এনসাইক্লোপেডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত টমাস জেফারসন ভার্জিনিয়ার উইলিয়ামসবুর্গে একজন পেশাদার উকিল হিসেবে ভূমিবিরোধ সংশ্লিষ্ট মামলা নিয়ে কাজ করেন। সিএনএনের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রæ জ্যাকসন ১৩ বছর বয়সে যুদ্ধে যোগ দেন এবং একজন তথ্য আদান-প্রদানকারী হিসেবে কাজ করেন। স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে জ্যাকসনের যোগাযোগ ছিল অনিয়মিত, তারপরও ভাই রবার্টসহ অ্যান্ড্রকে বন্দি করে ব্রিটিশরা। শত্রæপক্ষের এক সৈনিক জ্যাকসনকে তাঁর জুতা পরিষ্কার করে দিতে বললে, তা প্রত্যাখ্যান করায় জ্যাকসনের মুখে ছুরির আঁচড় কেটে দেয় সেই সৈনিক। সেটি এক স্থায়ী দাগ হিসেবেই থেকে যায় অ্যান্ড্র জ্যাকসনের গালে। মিলার সেন্টারের তথ্যমতে, আব্রাহাম লিংকন এক জেনারেল স্টোরে কেরানির কাজ করতেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন এখান থেকেই শহরের প্রায় সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করেন। অ্যান্ড্রæ জনসন একজন শিক্ষানবিশ দর্জি ছিলেন। আততায়ীর হাতে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের হত্যার সময় অ্যান্ড্র জনসন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। পরবর্তীতে তিনিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। রাফ আন্ড্রিস্ট-এর বই ‘এরি ক্যানাল’র তথ্যানুসারে জেমস গারফিল্ড চালাতেন খচ্চরে টানা নৌকা। বেনজামিন হ্যারিসনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, উকিল হিসেবে নিজের জীবন শুরু করার আগে তিনি আদালতের পক্ষ থেকে দিনে আড়াই ডলার পারিশ্রমিকে আদালত-চত্বরে পেশাদার হকারের কাজ করতেন। চিৎকার করে লোকজন ডাকাই ছিল তাঁর কাজ। সিএনএনের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩১তম প্রেসিডেন্ট হারবার্ট হুভার প্রথম জীবনে একজন খনি প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। ২৩ বছর বয়সে হুভার খনি ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে আরো অনেক জায়গায় সোনার খনিতে কাজ করেন। প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরি অ্যান্ড মিউজিয়াম ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ৩২তম প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট লেডইয়ার্ড ও মিলবার্ন এলাকায় ওয়াল স্ট্রিট ফার্ম ‘কার্টারের’ একজন শিক্ষানবিশ উকিল ছিলেন।
দ্য উইক সাময়িকীর তথ্যমতে, ৩৬তম প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি জনসন মুচির কাজ করতেন। পরে তিনি তাঁর এক চাচার খামারে রাখালের কাজ করেন। দ্য উইক জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭তম এই প্রেসিডেন্ট কসাইয়ের দোকানে মুরগির চামড়া ছাড়ানোর কাজ করতেন। ইয়েলো স্টোন পার্ক ফাউন্ডেশনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৮তম প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড প্রথম জীবনে ইয়েলো স্টোন পার্কের রক্ষী হিসেবে কাজ করতেন। দ্য উইকের তথ্যমতে, ৪০তম প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান সার্কাসের একজন কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সংবাদ মাধ্যম পিবিএসের তথ্য অনুসারে, পরে তিনি ইলিনয়ের দূরবর্তী ডিক্সন শহরে রক রিভার উপক‚লে জীবনরক্ষাকারী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন আরকানসায় এক মুদি দোকানে কাজ করতেন। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাস্কিন-রবিন্সের হনুলুলু শাখায় একজন আইসক্রিম বিক্রেতা ছিলেন।
দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশ ব্রাজিল । ব্রাজিলের কারখানা শ্রমিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি হন লুলা দা সিলভা। জুতো পালিশের টাকা জমিয়ে কিনলেন ঝুড়ি আর চিনা বাদাম। আয় কিছুটা বেড়ে গেল। এরপর পেলেন কারখানায় লোহা কাটার কাজ। একদিন আঙুলটাই কেটে গেল লুলার। তার মা-বাবা ছিলেন নিরক্ষর। ১০ বছর বয়সে পড়তে শিখেছিলেন। ১৪ বছর বয়সে স্কুল ছেড়েছিলেন লুলা। সামরিক একনায়কতন্ত্রের অবসানে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। একটি শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ১৯৮০ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি নামের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন লুলা। দলটি ২০০৩ সালে ক্ষমতায় আসে এবং ১২ বছর ক্ষমতাসীন থাকে। তিনি তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। জন ডি. ফ্রেঞ্চ ফ্রম মেটাল ওয়ার্কার টু প্রেসিডেন্ট অব ব্রাজিল’ শিরোনামে লুলার জীবনী প্রকাশ করেন। বইটিতে তাকে একজন বিশ্ব নন্দিত আকর্ষণীয় ক্যারিশম্যাটিক রাজনৈতিক নেতা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। যাকে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিশ্বরাজাদের এমন অতীত হলে আলমকে নিয়ে এতো সমালোচনা কেন? আশরাফুল আলম বগুড়ার এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা আশরাফুল আলম সাঈদ সিডি ব্যবসা, ডিশ ব্যবসার এক পর্যায়ে মিউজিক ভিডিও বানিয়ে হয়ে উঠেছেন হিরো আলম। নিজের বানানো মিউজিক ভিডিওতে নিজেই হিরো। নিজেকে হিরো ভাবাটাই কি হিরো আলমের দোষ ? টিভিতে প্রায়ই দেখা যায় উপস্থাপক বলছেন আপনিতো দেখতে হিরোর মতো নন তাহলে হিরো ভাবেন কেন? চলচিত্রে অভিনয় করছেন। হিরো ভাবাটা কি স্বাভাবিক নয়? সম্প্রতি এমপি নির্বাচনে অনেক সংবাদকর্মীকে প্রশ্ন করতে দেখা গেছে আপনি কেন নির্বাচনে এলেন? নাম কেন হিরো আলম? ইসি সচিব বললেন ‘হিরো আলমও…। এটাতো আলমের গণতান্ত্রিক অধিকার। মাত্র ৮৩৪ ভোটে হেরেছেন। তাহলে তার জনপ্রিয়তাই বা কম কিসের ? আলম দেখতে এতো সুন্দর নয়। আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। এটা কি দোষের নাকি দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ? এক সময় কলকাতার দর্শক বাংলাদেশের নাটক দেখতেন। এখন যে বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের টেলিভিশনের নাটক-সিনেমা দেখেন না, কারণ কী? টেলিভিশনের নাটক-সিনেমায় তো হিরো আলম বানান না। দেশের পুরো সংস্কৃতিই পাল্টে গেছে। হিরো আলম পাল্টায়নি। হিরো আলমকে দিয়ে একটি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন চরিত্রে অভিনয় করান দেখবে তার পেছন থেকে সমালোচনা উঠে গেছে।
‘দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, আমরা সমাজকে বদলে দেবো’ নামে হিরো আলম একটি বই লিখেছেন। বইটিতে স্বশিক্ষিত একজন হিরো আলম সমাজের উচ্চ শিক্ষিত মানুষদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন আমরা কোন পথে আছি। বইটির আলোচিত দশটি লাইন এরকম- ১. আপনারা শিক্ষিত কাগজে-কলমে, মনুষ্যত্বের শিক্ষা শিক্ষিত লোকের মাঝে তেমন একটা নাই। ২. আমি অশিক্ষিত হয়ে লাত্থি উস্টা খেয়েও বেঁচে আছি, আপনারা শিক্ষিতরা কেন আত্মহত্যা করেন? ৩. আমার চেহারাটা নিয়ে আর কী বলবেন? আল্লাহই তো আমারে বানাইছে। আমি তো বানাই নাই। আমি কী করবো? এই চেহারা চেঞ্জ তো করতে পারবো না। ৪. জীবনের সব ব্যবসা আমি টাকা দিয়ে করেছি, শুধু নির্বাচন ছাড়া। ৫. শিক্ষিতরা যে আমারে নিয়ে মজা করেন, আমার জায়গায় থাকলে তো রিকশা চালায়ে খাইতেন। আমি তো তাও চেহারা খারাপ বলে মিডিয়ায় আইছি, আপনার তো চেহারা মোটামুটি। আপনি তো তাও পারতেন না। ৬. আমি আমার ভক্তগো একবার ধন্যবাদ দিলে সমালোচকগো দুইবার ধন্যবাদ দেই। তারা আমার ভিডিও খিয়াল করে দেখে। ঘুমাতে যাওয়ার আগেও দেখে, উইঠেও দেখে। ৭. সার্টিফিকেটধারী শিক্ষিত লোক হইলো ভীতু। নিজেরা তো কিছু করবেই না, কেউ করতে দেখলেও গা জ্বলে। এরা যে কি চায় নিজেরাই জানে না। ৮. আমি পরিত্যক্ত সন্তান হয়ে চানাচুর বেচে, সিডি, ডিশ লাইন, মিউজিক ভিডিও করে ১০-১৫টা মানুষের দায়িত্ব নিতে পারি, আপনি শিক্ষিত হয়ে কিছু পারেন না কেন? ৯. আমি হিরো আলম আমার ভিডিও দেখে খালি মানুষ হাসবে এই জন্যে কাজ করি। আমার মাইনসের হাসিমুখ দেখতেই ভালো লাগে। এই সব ভাইরাল, সমালোচনা এসবের জন্যে কাজ করি না। ১০. আমি সকল বিধবা মা, পরিত্যক্ত নারী ও শিশুদের জন্যে একটা সংস্থা করে যেতে চাই। যাতে, আমার মায়ের মতো কারো মার যেন মাইর খেয়ে রাস্তায় বাচ্চা নিয়ে রাত কাটানো না লাগে।
বলতে পারেন অভিনয় করতে যোগ্যতা লাগে। এ বিষয়ে পড়া লেখার প্রয়োজন হয়। উত্তরে আসতে পারে এ বিষয়ে কজন শিল্পীই বা পড়ালেখা করেছেন। যদি বলেন ইউটিউবে ইচ্ছেমতো কনটেইন্ট তৈরি করে ভাইরাল হন তিনি। উত্তরে আসতে পারে ইউটিউব নিয়ে কতোটাই বা জোড়ালো আইন আছে দেশে। যদি অভিনয়ে যোগ্যতার প্রশ্ন উঠে তাহলে উত্তরে আসতে পারে ব্রিটিশ কমেডিয়ান মি. বিনের কথা। তার আসল নাম রোয়ান সেবাস্টিয়ান অ্যাটকিনসন। তার বাবা ছিলেন কৃষক আর মা ছিলেন গৃহিণী। তিনি কিন্তু স্পষ্ট করে কথা বলতে পারেতেন না। যাকে বলে তোতলা। কথা না বলেও মি. বিন চরিত্রে নির্বাক অভিনয় করে রোয়ান সেবাস্টিয়ান অ্যাটকিনসন থেকে পরিচিতি পেলেন মি. বিন। তিনি একজন সফল মানুষ, সফল অভিনেতা। সেক্ষেত্রে হিরো আলমকে নিয়ে এতো সমালোচনা কেন? অন্যদিকে রাজনীতিতে স্টাডির প্রয়োজন। লেখাপড়ার প্রয়োজন আছে। এটা ঠিক। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে কজনই বা স্টাডি করছেন। স্বশিক্ষিতরাও তো সাংসদ হচ্ছেন। তাহলে হিরো আলমকে নিয়ে এতো সমালোচনা কেন ? নির্বাচনে হেরে গিয়ে উপহার পাওয়া গাড়িটি জনকল্যাণে এ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে দিলেন। এতেও আমাদের বিবেক নিরব? তিনি লিখছেন,গাইছেন, অভিনয় করছেন। পাশাপাশি রাজনীতিও করছেন। আমরা অনেকেই যা পারছি না, হিরো আলম সেটা করার চেষ্টা করছে। তার চেষ্টাটাই বা কম কিসের? আলমের চেহারাটাই কি সমস্যা? আসলে এগুলো কোন সমস্যাই না। সমস্যা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে। অতএব সবক্ষেত্রে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট
rezaulpress.bd@gmail.com
বাসাইলসংবাদ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ / একেবি
সকলের অবগতির জন্য নিউজটি শেয়ার করুন