
টাঙ্গাইল- ৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার পর্ব-৬

বাসাইল সংবাদ: শনিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৭:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাসাইল-সখীপুর আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ হাবিব। শেখ মোহাম্মদ হাবিব, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৫৪ সালের ১ জুলাই সখীপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মৃত. শেখ হায়েত আলী সরকার মাতা মৃত. বাছিরন নেছা। স্ত্রী হেলেনা আক্তার। শেখ মেনন ও শেখ হাসনাত নামের দুই সন্তানের গর্বিত পিতা তিনি। প্রাচ্যের অক্সফোর্ট নামে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও বিএ পাশ না করে এই শিক্ষা জীবনের ইতি টানেন তিনি।
রাজনৈতিক জীবনে তার রয়েছে বিরাট পরিচিতি। সখীপুর উপজেলা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জেলা বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাকালীন শিল্প বিষয়ক সম্পাদক, জেলা বিএনপি’র সাবেক স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক, জেলা বিএনপি’র সাবেক সদস্য, জাগো দলের জেলা শাখা’র প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য, সখীপুর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ১ম দশজনের একজন (সংগঠক), উপজেলা ইউ.সি.সি.এ. লিঃ এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, উপজেলা শাখা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টা, সখীপুর সরকারি মুজিব অনার্স কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সম্মানিত সদস্য। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে সখীপুরে মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বপ্রথম ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ গ্রহণ করি। সেই ১০ জনের মধ্যে আমি অন্যতম।
মনোনয়ন এবং নির্বাচনে বিজয়ী হলে বাসাইল-সখীপুরের সার্বিক উন্নয়ন নিয়ে তার সাথে বাসাইল সংবাদ টুয়েন্টিফোর ডটকমের একান্ত আলাপচারিতা সরাসরি তুলে ধরা হলো।
১৯৭১ এর ২০ এপ্রিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৯টি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের (সখীপুরের) প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক ছিলাম। এছাড়াও সখীপুরের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে নিয়োজিত ছিলাম এবং আছি। একজন অভিনেতা হিসেবেও স্বাধীনতাত্তোর নাট্য আন্দোলনের একজন কর্মী ছিলাম। ১৯৭৬ সালে ৩০ জানুয়ারী সখীপুর থানা প্রতিষ্ঠা লগ্নে সংগঠক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করি। তৎকালীন আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করি।
তিনি বলেন, আমার নেতৃত্বে আরোও দু’একজন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আদর্শের নেতার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ১৯৭৬ সালে সখীপুর আসেন এবং ১৯৭৬ সালের ৩০ জানুয়ারী সখীপুর থানা ঘোষণা করেন। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের সেনা অভ্যূত্থানের পরে জাসদের উত্থান হলে জাসদ আওয়ামীলীগের লড়াইকে আমি পছন্দ করিনি। দেশে এক নায়কতন্ত্রের উদ্ভব হলে রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে ভাসানীর মতাদর্শকে অন্তরে লালন করতে থাকি এবং ছাত্র ইউনিয়ন করি। ১৯৭৪ ভাসানী ন্যাপ এর জেলা সদস্য হই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের সেনা অভ্যূত্থানের পর ভাসানীর মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা লাভ করতে না পারলে ভাসানীর অনুসারীরাও বিএনপিতে যোগ দিলে আমিও রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠি।
শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর ১৯৭৬ সনের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যূত্থানে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর ১৯৭৮ সালের শেষ দিকে টাঙ্গাইলের একটি মুক্তিযোদ্ধাদের দল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সেখানে আমিও ছিলাম। তখন থেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি অনুরাগ বাড়তে থাকে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশে ‘জাগো দল’ সৃষ্টি হলে তার সম্মানিত জেলা সদস্য, তারপর জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হলে তার জেলা সদস্য পদ লাভ করি। জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠিত হলে জেলা শিল্প বিষয়ক সম্পাদক নিযুক্ত হই।
সখীপুর থানা বিএনপি. প্রতিষ্ঠা করি এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করতে থাকি। তারপর থেকে চেতনায়, আদর্শে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ অন্তরে ধারণ ও লালন করে অদ্যাবধি কাজ করে যাচ্ছি। শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সখীপুরের সকল নেতাকর্মী আমার দ্বারাই অনুপ্রাণিত। ১৯৯১ সালে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। যাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল তাকে নিয়ে মাঠে ঝাপিয়ে পড়ি এবং বিএনপি বিজয় লাভ করে এবং সে সময় আমি সখীপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ছিলাম। তারপর বার বার মনোনয়ন চেয়ে না পেলেও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২০০৮ সালে নির্বাচন করি। বিপুল ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরও আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করে এই আওয়ামী সরকার। যা জনগণকে ভীষণ ভাবে আহত করে। যার জন্যে বর্তমানে আমার জনপ্রিয়তা আকাশ ছোঁয়া।
শুধুমাত্র বিএনপির প্রার্থীতার জন্য নই আমার পূর্বপুরুষদের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার কারণেও জনগণের আশা আকাঙ্খার জোয়ার আমার দিকেই প্রবাহমান। আমার সমগ্র জীবনই কেটেছে সততা ও নিষ্ঠার সাথে মানব কল্যাণের দোর-গোড়ায়। সখীপুর পি.এম পাইলট মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রাবাসের জন্য নিজের জমি দান করি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম তেমনি স্বাধীনতা অর্জনের পরে দেশ গঠণের অগ্রণী ভূমিকা রাখি।
সখীপুর বিদ্যুতের সাব স্টেশন আমার ঐকান্তিত চেষ্টায় স্থাপিত হয়। আমার সব কিছুতেই ছিলো সবার ভাগ। সবার পাওয়া। আমি সখীপুরের প্রান্তিক জনপদের মানুষকে কিছু দিতে চাই। আমি তাদের আসল অভিভাবক হবো প্রকৃত ভোটের মাধ্যমে। সেই সুন্দর দিনের অপেক্ষায় বাসাইল-সখীপুরের গণমানুষ। বাসাইল-সখীপুরের কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণের বোবা কান্না, নিরন্তর বুকের আকুতি- শেখ মোহাম্মদ হাবিবকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে চাওয়া এবং পাওয়া। সখীপুর-বাসাইলের আপামর জনসাধারণ, সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদেরও তৃষিত বুকের এই গভীর তৃষ্ণা মেটানোর অমৃত রস (মনোনয়ন) একমাত্র দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার হাতে। তিনিই একমাত্র পারেন এই প্রান্তিক জনপদের মানুষের প্রাণের দাবি মেটাতে শেখ মোহাম্মদ হাবিবকে মনোনয়ন দিলেই বাসাইল-সখীপুরে ফিরে আসবে প্রাণের স্পন্দন। নেতা কর্মী ও জনগণ আবার জেগে উঠবে। আমার আজন্ম চাওয়া সাধারণ মানুষের কাছাকাছি বেঁচে থাকার এক অনাবিল আশ্রয় – আমার সখীপুর। আমার বাসাইল-সখীপুর।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন