
বাসাইল সংবাদ: শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮:

নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে সন্তানের পিতৃপরিচয় পেতে সাত মাস বয়সী কন্যা শিশু সন্তান নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে জরিনা আক্তার নামের এক মা। জরিনা উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের বড়চওনা গায়েন মোড় এলাকার বিন্নাখাইড়া গ্রামের দিনমজুর (কৃষক) দুলাল হোসেনের মেয়ে। একই গ্রামের প্রতিবেশী আফাজ উদ্দিনের ছেলে আবু বকর সিদ্দিকের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে জরিনা এখন দু’কুল হারাতে বসেছে। না পাচ্ছেন বাবার ঘরে ঠাঁই; না পাচ্ছেন স্বামীর ঘরে!
জানা যায়, প্রায় ৫ বছর আগে জরিনা আক্তারের সঙ্গে আবু বকর সিদ্দিকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ প্রেম এক পর্যায়ে দৈহিক মেলামেশায় গড়ায়। জরিনার ভাষ্যমতে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবু বকর তার সঙ্গে মেলামেশা করে। বিয়ের চাপ দিলেও আবু বকর নানা তালবাহানা করতে থাকে। বছর খানেক আগে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরিবার ও স্থানীয় মাতাব্বরদের সমম্বয়ে আবু বকরের সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। প্রায় দুই মাস ঘর সংসারের পর স্থানীয় একটি ক্লিনিকে কন্যা সন্তান হলে জরিনাকে আর নিজের বাড়িতে নেয়নি স্বামী আবু বকর। জরিনার দাবি কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী আবু বকরের মন খারাপ হয়ে যায়। এদিকে আবু বকর সিদ্দিক প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান। দিনমজুরের মেয়ে জরিনাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে নানা ফঁন্দি করতে থাকে। সে বলেই দেন ওই সন্তান তার নয়! এ ব্যাপারে জরিনা স্থানীয় কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদে বিচার প্রার্থী হন।
ইউপি চেয়ারম্যান এসএম কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে অনেক দেনদরবার হয়েছে। একদিকে মেয়েটির বয়স কম অন্যদিকে নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় গ্রাম্য আদালতে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়নি। শুনেছি তারা পারিবারিক আদালতের শরাণাপন্ন হয়েছে।
জরিনার বাবা দুলাল হোসেন বলেন, বিয়ের সময় ছেলে পক্ষ থেকে আমার মেয়ের নামে ১৫ শতক জমি লিখে দেওয়া হয়। এখন উল্টো আমার নামে ও মেয়ের মায়ের নামে শুনেছি মামলা করেছে আবু বকর ও তার বাবা আফাজ উদ্দিন। নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। তারা প্রভাবশালী লোক। প্রভাব খাটিয়ে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করে আমাদের নামে বদনাম ছড়াচ্ছেন এমন কি এলাকা ছাড়ার হুমকিও দিচ্ছেন।
জরিনা আক্তার বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবু বকর তার সঙ্গে মেলামেশা করে। জরিনার দাবি কন্যা সন্তান হওয়ায় স্বামী আবু বকরের মন খারাপ হয়ে যায়। এখন ভরণ পোষন তো দূরের কথা সন্তানকেই সে অস্বীকার করছে। ডিএন এ পরীক্ষা করে হলেও আমি আমার কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের স্বীকৃতি চাই। সাত মাস বয়সী কন্যা সিনহা বড় হয়ে যখন জানতে চাইবে তার বাবা কে? তখন আমি এর কি জবাব দেব? আমি জীবনে আর কিছুই চাইনা শুধু কন্যা সন্তানের পিতৃপরিচয়ের জন্যই বুকে চাপা থাকা নানা কষ্টের মাঝেও বেঁচে আছি; বলেই অঝোরে কান্না করতে থাকে একজন জরিনা।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন