
বাসাইলসংবাদ: শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮:

নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেছে স্থানীয় এমপি পক্ষের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা মিছিল শেষে উপজেলা ফোয়ারা চত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে ঢাকা-সখীপুর সড়ক অবরোধ করে রাখে। এছাড়া অঘোষিতভাবে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা শহরে আধাবেলা হরতাল পালন করেছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরকে সখীপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার কুশপুতুলে আগুন দেয়। এদিকে এ ঘটনার পরিপেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ শুক্রবার দুপুরে সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষনা করেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম সমর্থিত উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সজিব আহমেদকে আহবায়ক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে জেলা ছাত্রলীগ। এতে ৬ জনকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। তারা হলেন- খান রফিক, আজাদ হিরা, আবু শিহাব, জামিল আহমেদ, রাসেল আল মামুন ও ফরিদুল ইসলাম ফরিদ। টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল ১০১ সদস্য বিশিষ্ট সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এমপি অনুপম শাহজাহন জয় সমর্থিত ও পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে ঢাকা-সখীপুর সড়কের মোখতার চত্বর অবরোধ করে জোয়াহেরুল ইসলামের ছবিতে আগুন দেয়। এ সময় তারা জোয়াহেরুল ইসলামের সাটানো বিলবোর্ড ভাঙচুর করে।
এ সময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আরিফ সরকার, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, সরকারি মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের ভিপি আব্দুর রউফ, জিএস রাসেল আল মামুন, পৌর ছাত্রলীগের আহবায়ক সোহেল সিকদার, মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফ, শাহীন আহমেদ, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মির্জা শরীফ, বাবুল আহমেদ প্রমুখ।
মির্জা শরীফ বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাব খাটিয়ে অছাত্রদের দিয়ে পকেট কমিটি ঘোষণা করিয়েছেন। নিয়মিত ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা বাতিল না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
সদ্যঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক সজিব আহমেদ বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই ছাত্রলীগের কর্মীদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যারা মিছিল করছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নন।
জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রনি আহমেদ বলেন, গঠনতন্ত্র অনুসারে নিয়মিত ছাত্র ও ত্যাগী কর্মীদের দিয়েই কমিটি দেয়া হয়েছে।
সখীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আরিফ সরকার বলেন, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ন। তাদের কোন উপজেলা কমিটি অনুমোদনের এখতিয়ার নেই। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী যার বয়স ২৯ বছরের বেশী সে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে পারে না এবং যাকে আহবায়ক করে কমিটি ঘোষনার কথা শুনছি জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার বয়স ২৯ বছর ১১মাস ৮ দিন, এই কমিটি অবৈধ ও গঠণতন্ত্র পরিপন্থি।
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুর রহমান খান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের এবং সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক শওকত সিকদার এবং পৌরসভার মেয়র আবু হানিফ আজাদের নির্দেশক্রমে সম্মেলন প্রস্তুত করার জন্য তিনমাস মেয়াদী ১০১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
বাসাইলসংবাদ/একে