
বলাৎকারের অভিযোগে ভণ্ড পীরকে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন

বাসাইলসংবাদ: বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের সখীপুরে ভণ্ড পীরের বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত আব্দুল খালেক নামের এই ভণ্ড পীরকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সখীপুর-ইন্দারজানি সড়কের মহানন্দপুর বাজারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মহানন্দপুর বিজয় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড সংসদ, বাজার বণিক সমিতি, আদিবাসী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, মহানন্দপুর বিজয় স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীন, কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, বণিক সমিতির সভাপতি ওসমান গণি, ওই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী সালেহীন শান্তা প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ভণ্ডপীর আব্দুল খালেক প্রায় দুইযুগ ধরে এলাকার সহজ সরল মানুষকে যাদু-টোনা দেখিয়ে তাবিজ-কবজ দেন। সুদের ব্যবসাসহ নানা প্রতারণামূলক কর্মকা- চালিয়ে আসছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বহু যৌন কেলেঙ্কারীসহ অসামাজিক কর্মকা-ের অভিযোগ রয়েছে। এই অশ্লিল ভ-পীরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার আহবান জানান এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আল্টিমেটাম দেন ।
উল্লেখ্য, গত ২১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিকেলে বলাৎকারের শিকার ওই শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে ভণ্ডপীর আব্দুল খালেককে (৫২) আসামি করে সখীপুর থানায় যৌন নির্যাতনের (বলাৎকার) অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি আমলে নিয়ে ওই কিশোরের শারীরিক পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের পাঠান।
উপজেলার বহেড়াতৈল গ্রামে অভিযুক্ত আব্দুল খালেকের বাড়ি। সে তার স্ত্রী ও ছেলের বউকে নিয়ে সখীপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডে পাঁচতলা বাড়ি করে প্রায় পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছেন।
পুলিশ ও ওই স্কুলছাত্রের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই কিশোর নানার বাড়ি বেড়াতে আসলে পীর আব্দুল খালেকের সাথে পরিচয় হয়। ওই সূত্র ধরে ঘটনার দিন
রাত সাড়ে নয়টার দিকে কিশোরটিকে তার ক্যারামতি দিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন প্লাস পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে পীরের বাসায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে যৌন নির্যাতন (বলাৎকার) চালান। নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে কিছুক্ষণ পর ওই পীর কিশোরটিকে তার নানার বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
ওই কিশোরের মা জানান, ঘটনার দুইদিন পর আমার ছেলে পায়ু পথে প্রচণ্ড ব্যথায় চিৎকার করে উঠে। এর কারণ জিজ্ঞেস করলে ঘটনাটির বিস্তারিত জানায়। ছেলেটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে এবার অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত।
এঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মামলার পর ওই পীর আব্দুল খালেক গা ঢাকা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ভুঁইয়া বলেন, এঘটনায় ছেলেটির মা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বাসাইলসংবাদ/একে