
বাসাইল সংবাদ : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭:

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৭ এর বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ এসএমসি ক্যাটাগরিতে বাছাই পর্বের ফলাফলে অস্বচ্ছতার দাবি তুলে পুনঃ মুল্যায়নের আবেদন করেছে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ৪০ নং বড় ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি এম এ রাজ্জাক। ১৮ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও বিভাগীয় কমিমনারের কার্যালয়ে লিখিতভাবে এ আবেদন করেন তিনি। আবেদন গ্রহণ করে রিসিভ কপি সংগ্রহ করেছেন এম এ রাজ্জাক।
তার দেওয়া লিখিত অভিযোগে পাওয়া যায়, তিনি কালিহাতী উপজেলার ৪০ নং বড় ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৭তে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। সাক্ষাৎকারের কয়েকদিন পরে জানতে পারে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার পলাশ ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ডা. সমরেশ চন্দ্র সাহাকে শ্রেষ্ঠ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। পরে ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি এম এ রাজ্জাক তার কর্মকান্ড অনুকরণ করতে নরসিংদীর নির্বাচিত ওই বিদ্যালয়ে যান। সেখানে গিয়ে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রমের চেয়ে কোন অংশেই এগিয়ে নেই বলে তিনি দাবি করে এ অভিযোগটি তোলেন।
ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতির অভিযোগ, বিগত বছরে তার বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষকে ডিজিটালইজেশন করা ,অফিস কক্ষ সজ্জিত করা, দুপুরের খাবার নিশ্চিত করতে মিড ডে মিল চালু করা, বাগান করণ, বইসহ লাইব্রেরী চালু করা, বিনা মূল্যে টিফিনবক্স বিতরণ করা, সততা শেখাতে দুকানীবিহীন আদর্শ ষ্টোর, প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষে তার বিদ্যালয়ের নিজস্ব সফ্টওয়ারে ওয়েবসাইড তৈরি করা, শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরা ও ফেসবুক পেইজ করা এমন কি সভাপতির নিজ খরচে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফরে নেওয়াসহ নানা আধুনিকায়ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যা নির্বাচিত সভাপতি ডা. শমরেশ চন্দ্র সাহার নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার পলাশ ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি।
সমাপনী পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে সভাপতি নিজে পরীক্ষার্থীদের বাড়ী ডে-নাইট ভিজিট করে থাকেন। সমাপনী শিক্ষার্থীদের বাড়ির স্যাটেলাইট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। নিজেই বিনা পারিশ্রমিকে গণিতের বিশেষ ক্লাশ নিয়ে থাকেন শিক্ষার্থীদের। যার ফলে গতবছরের সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলে ৩৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৮জন শিক্ষার্থী এ+ এবং এদের মধ্যে ৫জনের ট্যালেন্টপুলসহ ৭জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। কার্যক্রম, পড়ালেখার মানসহ আধুনিকায়নে তার বিদ্যালয়টি একধাপ এগিয়ে আছেন বলে মনে করেন তিনি।
তার অভিযোগ সভাপতি নির্বাচনে স্বচ্ছ হয়নি। বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ও এসএমসি সভাপতিদের ভালো কাজের আগ্রহ বাড়াতে সভাপতি নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনতে হবে। তা না হলে জাতি কাঙ্খিত প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে।
বিদ্যালয়টির সভপতি এম এ রাজ্জাক বলেন, ৪০ নং বড় ইছাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম দেশে মডেলে পরিনত হয়েছে। আমি উপজেলা ও জেলাতে প্রথম হয়েছি। স্বচ্ছতার সাথে সভাপতি নির্বাচিত হলে তিনি বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ সভাপতি হবেন বলে তার দাবী। তিনি আরো বলেন বিষয়টি পূণঃমুল্যয়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে।
তার আরো অভিযোগ, উক্ত বিভাগের উপ-পরিচালক ইন্দু ভূষণ দেব একসময় নরসিংদীর পলাশে চাকুরী করতেন। এই দুর্বলতা থেকেই তিনি পলাশ ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত করেছেন।
এদিকে ওই বিদ্যালয়েও খোজ নিয়ে দেখা গেছে, বিভাগীয় প্রধান হওয়ার অনেক নিয়মের ঘাটতি রয়েছে। বিদ্যালয়ের রেজুলেশন বইয়ে সভাপতির স্বাক্ষরে কোন মিল নেই। বিদ্যালয়ের জরুরী মিটিংয়ে সভাপতিসহ দুজনে স্বাক্ষরে মিটিংয়ে আইন পাস দেখানো হয়েছে। যা নিয়ম বহির্ভুত।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন