বাসাইল সংবাদ: সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৬:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ডাক জীবন বীমা গ্রাহকদের টাকা চুরির অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন অফিসে লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল না পাওয়ার ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন গ্রাহকরা। গ্রাহকরা তাদের ডাক জীবন বীমা পূনরুজ্জীবিত করণে উর্ধŸতন অফিসের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
জানা যায়, অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন বিগত ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসে পোস্টম্যানের দায়িত্ব ছিলেন। তখন কাউন্টার অপারেটর পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন কালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বীমা গ্রাহক তার নিকট নানা অংকের কিস্তি জমা দেন। আলমগীর হোসেন গ্রাহকদের টাকার বিপরীতে রশিদ প্রদান করলেও রশিদ বইয়ের মুড়িতে টাকার পরিমাণ কম লিখে গ্রাহকদের নামে লেজার বইয়ে জমা করে মোটা অংকের টাকা নিজের পকেট করেন। অনেক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন আলমগীর হোসেন তাদের পূর্ণ কিস্তিই আত্মসাত করেছে। ফলে বীমা গ্রাহকরা নিয়মিত কিস্তি জমা দিয়ে আসলেও তা নিজেদের অনুকূলে জমা না হওয়ায় তাদের বীমা বাতিল হয়ে গেছে। বাসাইল সদর পোস্ট অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ রকম প্রতারিত ও বাতিল হয়ে যাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা কমপক্ষ্যে ৬৭জন। বীমা গ্রাহকদের অভিযোগ এ ব্যাপারে তারা প্রধান কার্যালয় বরাবর একাধিক অভিযোগপত্র প্রেরণ করেও প্রতিকার না পাওয়া সত্তেও তারা পূনরায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারিদের একজন বীমা গ্রাহক জলি ভূইয়া কেন্দ্রীয় সার্কেল ঢাকা’র পোস্ট মাস্টার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহবুব রশিদ বরাবর গত ১৮জুলাই ২০১৬ই লিখিত ৬৫৭ নম্বর অভিযোগ পত্রে জানান আমি পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের নিকট ২০১২ এবং ২০১৩সালে দু’বারে মোট ৪ হাজার ৯শ ৯২ টাকার কিস্তি জমা দিলেও পরে লেজার চেক করে জানতে পারি আলমগীর হোসেন আমার নামে ৩হাজার ৭শ ৪৪ টাকা জমা করে অবশিষ্ট ১ হাজার ২শ ৪৮ টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে, ফলে আমার নামিয় বীমাটি বাতিল হয়ে আছে। বীমা গ্রাহকদর অভিযোগ আলমগীর হোসেন তাদের ডাকজীবন বীমা থেকে লাখ টাকার অধিক হাতিয়ে নিয়েছেন। পোস্টম্যান আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে বাসাইল উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন অনিয়মের সততা স্বীকার করে বলেন, গ্রাহকদের বীমা সচল করার প্রক্রিয়া চলছে, তাকে একবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল, অভিযোগের ভিত্তিতে পূনরায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বাসাইল সদর পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্টম্যান বর্তমানে মির্জাপুর উপজেলা সদর পোস্ট অফিসের পোস্টাল অপারেটর অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন অর্থ অনিয়মের কথা স্বীকার করে বলেন, এজন্য আমি দীর্ঘদিন সাময়িক বরখাস্ত ছিলাম, গ্রাহকদের ৩০হাজার টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্থ বীমা গ্রাহকরা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে জানান একবার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলেও হয়তো জেলা কার্যালয়ের কোন কর্তাব্যক্তি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে শাস্তি হতে অব্যাহতি দিয়ে তার পদোন্নতির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গ্রাহকরা তাদের বীমা সচল করার পাশাপাশি আলমগীর হোসেনের শাস্তি দাবি করেছেন।
বাসাইল সংবাদ/একে
সংবাদটি শেয়ার করুন