সাহায্যের আকুতি অসহায় পিতা-মাতার
বাসাইল সংবাদ: রোববার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭:
॥ এম শহিদুল ইসলাম ॥
“মানুষ মানুষের জন্য জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ?” সমাজের এমনই বিত্তবান, দানশীল, হৃদয়বান ও সহানুভূতিশীল মানুষের কাছে মানবিক সাহায্যের সদয় আকুতি জানিয়েছেন চিকিৎসার অর্থের অভাবে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে শিশু আতাউরের অসহায় পিতা-মাতা। মাত্র সাড়ে তিন বছরের নিষ্পাপ শিশু আতাউর।
সাড়ে তিন বছর আগে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে জন্ম হয় তার। হতভাগ্য আতাউর তার পিতা-মাতার দ্বিতীয় সন্তান। পিতা-মাতার কোল জুড়ে শিশুটি যখন পৃথিবীর আলোর মুখ দেখলো তখন থেকেই সে অসুস্থ। জন্মের পর নবজাতক এ শিশুটি মায়ের দুধও পান করতে পারেনি। জন্ম থেকেই বিরামহীন কান্না আর খিচুনী। কী দুর্ভাগ্য তার! জন্মের পরপরই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নবজাতকের হার্টে ছিদ্র ধরা পড়ে। আতাউরের হার্টে ৫টি ছিদ্র সনাক্ত করা হয়েছে। এ খবরে সদ্যজাত আতাউরের অসহায় দরিদ্র পিতা-মাতার সংসারে নেমে আসে দুশ্চিন্তার কালো ছায়া। এতটুকুন শিশু, আর কত বড় রোগ! কিভাবে চলবে এর চিকিৎসা ? একদিকে সন্তানের নির্ঘুম ছটফটানি গগণবিধারি আহাজারি অপরদিকে চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে উৎসের সন্ধান, এসব মিলিয়ে অমানবিক জীবন যাপন পিতা-মাতার। এমন দুরাবস্থার মধ্যে পিতা-মাতার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কারণ এই চিকিৎসায় যে বেশ ব্যয়বহুল তা ইতঃমধ্যে জেনে গেছে শিশুটির বাবা আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ ও মাতা রমেনা ইয়াসমিন। আতাউরের বাবা আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ একজন এনজিও কর্মী, মাতা রমেনা ইয়াসমিন গৃহিনী। মা’সহ দুই পুত্র সন্তান নিয়ে ৫ সদস্যের সংসারের খরচ চালাতেই হিমসিম পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ । তার উপর সন্তানের এমন ভয়াবহ মরণব্যাধির চিকিৎসার ব্যায় বহুল খরচ। এমতাবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূর পিতা-মাতা। চিকিৎসার অর্থের অভাবে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এখন শিশু আতাউর। সন্তানের চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে পিতা-মাতা। কিন্তু কোথায় পাবেন এত টাকা? কে এগিয়ে আসবেন তার সন্তানের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে? তবু আশাহত হননি তিনি। সাহায্য কামনা করলেন সমাজের সামর্থ্যবান বিত্তশালী মানুষের কাছে। তার বুকভরা আশা এই ছোট্ট শিশুটির প্রাণ বাঁচাতে সমাজের কেউ না কেউ এগিয়ে আসবেনই। শিশু আতাউরের বাবা আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের গ্রামের বাড়ি বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার হাড়ভাঙ্গা গ্রামে। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া নন্দিনী সিনেমা হলের উত্তর পাশে শাহজাহান তালুকদারের বাসায় ভাড়াটে হিসেবে অবস্থান করছেন। তিনি করটিয়া শাখার ব্র্যাক কর্মী হিসেবে কর্মরত । সামান্য বেতনে কোন রকমে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলে তার সংসার। তার ওপর আতাউরের দূরারোগ্য ব্যাধির ব্যয়বহুল চিকিৎসা তাকে আরও দুশ্চিন্তার গভীর খাদে ফেলে দিয়েছে। এই দুরবস্থা থেকে মুক্তি চান আব্দুর রাজ্জাক । ঢাকা হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকার ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. নূরুন্নাহার ফাতেমা উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের নারায়না হার্ডিলিয়া হসপিটাল এর বিষেশজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির নিকট রেফার্ড করেন। ডা. দেবী শেঠি শিশুটিকে সাড়ে তিন বছর বয়সের মধ্যে ওপেনহার্ড সার্জারি না করলে শিশুটিকে বাঁচানো যাবে না বলে জানান। সুতরাং এই মুহুর্তে শিশুটির হার্ট অপারেশন করলে বেঁচে যেতে পারে একটি তাজা প্রাণ। ইতঃমধ্যে সহায় সম্বল বিক্রি করে, এনজিও ঋণ ও নিকট আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে কর্জধার করে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন মেডিক্যালে চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৪/৫ লক্ষ্য টাকা খরচ করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে পরিবারটি। এ অবস্থায় তার সামনে এগোনোর কোন ব্যবস্থাই আর অবশিষ্ট নেই। অসহায় পিতা-মাতা মৃত্যু পথযাত্রী আতাউরের চিকিৎসার দায়িত্বভার সরকারের কোন মহল কিংবা সমাজের বিত্তবান, দানশীল ও হৃদয়বান মানুষের কাছে মানবিক সাহায্যের সদয় আকুতি জানিয়েছেন। পবিত্র কোরআনের তাফসির মোতাবেক “অসুখে চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক চাহিদার সময়েও সাহায্য করা বিত্তবান মানুষের অবশ্য কর্তব্য। অর্থাৎ যে কোন মৌলিক প্রয়োজনে সাহায্যের হাত সম্প্রসারিত করতে হবে”। আর এ সত্যকে সামনে রেখে এই ভাগ্যাহত শিশুটির চিকিৎসায় অবশ্যই সাহায্যের হাত বাড়াবেন সমাজের বিত্তবানরা। এমনই আশায় বুক বেধেছেন আতাউরের মা-বাবা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ি এই মুহুর্তে শিশুটিকে ওপেনহার্ড সার্জারি করাতে না পারলে তাকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানালেন শিশুটির পিতা-মাতা। ওপেনহার্ড সার্জারির মতো অপারেশন করাতে ঢাকা হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, ঢাকার ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. নূরুন্নাহার ফাতেমা ভারতের নারায়না হার্ডিলিয়া হসপিটালের হার্ট স্পেশালিস্ট ডা. দেবী শেঠীর নিকট রেফার্ড করেছেন। এ চিকিৎসার জন্য প্রায় ৭/৮ লক্ষ্য টাকা খরচ হবে বলে সংশ্লিষ্ট হসপিটাল কর্তৃপক্ষের বরাদ দিয়ে “ বাসাইল সংবাদ ২৪ ডটকম’কে” জানান শিশুটির পিতা-মাতা। তাই আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ ও মাতা রমেনা ইয়াসমিন তাদের কলিজার টুকরা সন্তানের জীবন বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য সমাজের হৃদয়বান ও বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য হাত পেতেছেনে। তাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা- মোঃ আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ, হিসাব নং ৩৪২৫১০১০৭২৮৭৬, পূবালী ব্যাংক লিঃ, করটিয়া শাখা, টাঙ্গাইল। অথবা বিকাশ নম্বর- ০১৭২৮৫০০০৬০।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন