বাসাইলসংবাদ: শনিবার, ২৪আগস্ট, ২০১৯:
॥ মো. জোবায়ের হোসেন ॥ স্বামীর সাথে বনিবনা হয় না। তাই প্রায় আট বছর যাবৎ নিজের মা ও দুই ছেলে নিয়ে আলাদাভাবেই চলছিলো স্বপ্নার জীবন। বড় ছেলে ঢাকায় আর ছোট ছেলে মির্জাপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। এতদিন থাকতেন ভাড়া বাড়িতে। গত দুই বছর আগে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে কোকারের কাজ করা স্বপ্না কষ্টার্জিত আয় দিয়ে পৌর সদরের পাহাড়পুরে ৩ শতাংশ জায়গা কিনে একটু একটু নিজের একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেই ঘর দুর্বৃত্তের দেওয়া আগুনে পুড়ে মুহূর্তেই ছাই। গত বৃস্পতিবার মধ্যরাতে উপজেলা পৌর সদরের পাহাড়পুর এলাকায় এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে সবমিলিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্থ স্বপ্না সরকার।
শুক্রবার দুপুরের স্বপ্নার ভষ্মিভূত হওয়া বাড়ি পরিদর্শন করেছেন টাঙ্গাইল জেলা প্রসাশক মো. শহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়। বাড়িটি পরিদর্শনে এসে ক্ষতিগ্রস্থ স্বপ্না সরকারের হাতে ৬ বান টিন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৩০ হাজার ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আরও নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেন তারা। সে সময় মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মালেক, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. মাঈনুল হক, মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ক্ষতিগ্রস্থ স্বপ্না সরকার জানান, ঘটনার রাতে তিনি এবং তার মা খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে প্রথমে টিনের চালে ঢিলের শব্দ হয় তার কিছুক্ষণ পর ঘরে আগুন লাগার বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন। দ্রুত ঘর থকে বের হয়ে তিনি দুইজনকে দৌড়ে যেতে দেখেন। তবে তাদের সাথে কারও কোন শত্রুতা বা ধর্মীয় ভেদ নেই বলে জোর দিয়ে জানান তিনি। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, স্বপ্না সরকারের সাথে তার স্বামী ভরত সরকারের দীর্ঘ দিনের মনমালিণ্য রয়েছে। তারা একসাথে বসবাসও করছেন না। বিষয়টি আমলে নেওয়া হলেও স্পষ্ট করে ঘরের আগুন দেওয়ার মুল হোতা কে বা কারা তা এখনো পরিস্কার নয়।
পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এটিকে ভিন্নভাবে ভাববার কোন সূত্র নেই। তবে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে ও হবে এবং যে বা যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বাসাইলসংবাদ/একেবি