
বাসাইল সংবাদ : বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭:

এম সাইফুল ইসলাম শাফলু, সখীপুর ॥
টাঙ্গাইলের সখীপুরে বাড়ছে মাংসল ‘ব্রাহমা’ জাতের গরু পালন। এ জাতের মাংসল গরু আমেরিকায় পালন করা হলেও বর্তমানে সখীপুরেও এটি পালন করা হচ্ছে। এ জাতের ষাঁড় মাত্র তিন বছর বয়সে ওজন দাঁড়াবে একটন (২৭ মণ)। আমেরিকা থেকে ব্রাহমা জাতের সিমেন (প্রজনন) সংগ্রহ করে সরকারের মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় জেলা ও উপজেলার খামারি বা কৃষকদের গরু পালনের প্রণোদনা দিচ্ছেন। সখীপুরে যে হারে ব্রাহমা জাতের গরু পালন বাড়ছে তাতে করে উপজেলার মাংসের চাহিদা মিটিয়ে দেশের সিংহ ভাগ মাংসের চাহিদা পূরণ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের মাংসের ঘাটতি দূর করার জন্য ২০০৮ সালে আমেরিকা থেকে উন্নত ব্রাহমা জাতের গরুর সিমেন নিয়ে এসে নির্বাচিত দেশীয় জাতের গাভীকে প্রজনন দিয়ে এই জাতের গরু পালন করা হচ্ছে। মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর ‘বিফ ক্যাটল ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের আওতায় এ জাতের গরু উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেন। ক্রমান্নয়ে এ উপজেলায় ২০০ জন খামারিকে নির্বাচন করে পাঁচ শতাধিক গাভীকে প্রজনন দেয়া হয়েছে । এরমধ্যে ১৫০ টি বাছুর জন্মেছে। দুই থেকে আড়াই বছরের বাছুরের ওজন মিলেছে প্রায় ৭৬০ কেজি। এ জাতের গরু এক বছরের মধ্যে দেশি গরুর চেয়ে তিনগুণ বেশি মাংস বৃদ্ধি ঘটায় বলে জানিয়েছে সখীপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর ।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর সভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গড়গোবিন্দপুর গ্রামের আখতার হোসেন ব্রাহমা জাতের গরু পালন করছেন। তার পালিত ২৮মাস বয়সী ষাঁড় বাছুরটির ওজন হয়েছে ৭৬০ কেজি (১৯ মণ)। তিনি বলেন, এই ষাঁড় শান্ত স্বভাবের হওয়ায় আমার ছেলে-মেয়েরা পড়াশুনার ফাঁকে ষাঁড়ের যতœ নিতে পারে।
সব চেয়ে বড় সুবিধা হলো দেশি গরুর মতো এই গরু সবকিছুই খায়। গরুটি দেখার জন্য প্রায়ই টাঙ্গাইল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসুক লোকজন আসেন।
একই গ্রামের নূরুল ইসলামের ২৭ মাস বয়সী ষাঁড়ের ওজন হয়েছে ৭৪০ কেজি। প্রতিমা বংকী গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ষাঁড় গরুর ওজন হয়েছে ৬৮০ কেজি। সানবান্ধা গ্রামের আবদুর রহমান তালুকদারের গরুর ওজন হযেছে ৬৪০ কেজি, সখীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আয়নাল হকের গরুর ওজন হয়েছে ৬৪৫ কেজি।
এ ব্যাপারে সখীপুর উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম উকিল উদ্দিন বলেন, খামারিদের মাঝে ওষুধপত্র, ভ্যাকসিন বিনামূল্যে সরবরাহ করছি। ১৮ মাস পর এই গরুর মাংস খাওয়ার উপযোগী হবে। খামারিরা এই গরু লালন-পালন করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। ব্রাহমা জাতের গরু পালনে দেশে আমিষের ঘাটতি পূূরণে সহায়ক হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও জানান, ৩ বছর বয়সী একটন ওজনের ষাঁড় কিংবা বকনা গরু খামারিরা ৪ থেকে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন