টাঙ্গাইল- ৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার পর্ব-৫
বাসাইল সংবাদ: বুধবার, ২৫অক্টোবর, ২০১৭:
নিজস্ব প্রতিবেদক:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাসাইল-সখীপুর আসনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আব্দুল মালেক মিঞা। তিনি ১৪ই আগষ্ট ১৯৫১ সখীপুর উপজেলার হাতীবান্দা গ্রামে এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মহগ্রহণ করেন। বাবা মরহুম তোফাজ্জল হোসেন মাতা মরহুমা জোবেদা খানম।
বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ঢংপাড়াতেও তার বাড়ি রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ (অনার্স), এম. এ (পরিসংখ্যান) করেন। তিনি ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ওয়ার উইক, বিশ্ববিদ্যালয় হইতে অর্থনীতিতে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রি লাভ, ১৯৭৪ সালে প্রতিযোগীতা মূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে প্রথম শ্রেণী কর্মকর্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাকুরী জীবন শুরু করে দীর্ঘ ৩৪ বছর বিভিন্ন পদমর্যাদায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অর্থ, ব্যাংকিং, মুদ্রা নীতি সংক্রান্ত কর্মকান্ডে নিয়োজিত ছিলেন।
১৯৭৭ সালে “বাংলাদেশ ব্যাংক অফিসার্স ও ওয়েলফেয়ার কাউন্সিলে সহ-স¤পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন, ১৯৮৫-৮৬ এবং ১৯৮৬, ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে “বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ” টাঙ্গাইল জেলা সমিতি এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে থাকা কালীন সময়ে গরীব মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান, দুরারোগ্য রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, ঘুর্নিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সাহায্য বিতরণসহ সমাজহিতৌষী বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৯২ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ৩টি মেয়াদের জন্য “বাংলাদেশ ব্যাংকস্থ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কর্মকর্তা/কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে সফলভাবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ডঃ ফরাস উদ্দিনের গঠিত একটি কল্যাণ তহবিল নিজের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১,০০০/- টাকা করে দিয়ে আসছেন তিনি, যা আজীবন চালু থাকবে।
টাঙ্গাইল জেলা সমিতির আজীবন সদস্য ও অন্যতম উপদেষ্টাও তিনি। ১৯৮৩ সালে মোহাম্মদপুর থানাধীন রামচন্দ্রপুর মৌজায় প্রায় ৫০ একর জমি নিয়ে একটি আবাসিক প্রকল্প “নবোদয় বহুমূখী সমবায় সমিতি লিমিটেড” নামের সমবায় সমিতির জন্মলগ্ন থেকে সেক্রেটারীর দায়িত্বে নিয়োজিত। ১৯৯৮ সাল থেকে টুঙ্গীর অদূরে গাছা মৌজায় প্রায় ৩০০ একর জমি নিয়ে স্বল্প আয়ের সরকারি চাকুরীজীবিদের জন্য একটি আবাসিক প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের পধান হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত তিনি। ২০০৪ সালে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার জনসাধারণের খাদ্য, বস্ত্র ও ঔষধ পত্রাদি বিতরণ এবং সখিপুর উপজেলার প্রতিটি গ্রামের দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নিয়ে একটি ফ্রি মেডিক্যাল টিমের আয়োজন করা করেন তিনি।
প্রতি বছর দুই বার এ ধরণের বিনা মূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। সেবামূলক কর্মকান্ড ছাড়াও সখিপুর উপজেলার হাতীবান্দা ইউনিয়নে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ৩টি প্রাথমিক স্কুল ও কামালিয়াচালাতে ১টি সিনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। বাসাইল উপজেলায় কাঞ্চনপুর গ্রামে ১টি প্রাথমিক স্কুল ও ১টি মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত। এছাড়া সখিপুর ও বাসাইল থানার বিভিন্ন স্কুল, কলেজের মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান, দরীদ্র মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদের লেখাপড়ায় আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতায় বহু শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ, বহু দরীদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েদেরকে আর্থিক সহযোগীতায় বিবাহের ব্যবস্থা, বিগত ২০ বছর যাবত শিক্ষিত ছেলে মেয়ের কর্মসংস্থান ও চাকুরী প্রদানের মাধ্যমে সর্বস্তরের মানুষের ভালবাসা/শ্রদ্ধা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন তিনি। সখীপুর এবং বাসাইল এ দুটি উপজেলাতেই বাড়ী থাকার সুবাদে এলাকায় বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ ও রাস্তা উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান থাকার কারণে এলাকার মানুষের সাথে নিবিড় স¤পর্ক গড়ে উঠেছে। সখীপুর উপজেলাধীন হাতীবান্ধা পাহাড়ের ঢালে বাধ নির্মাণ করে ৫০ একর জমির উপর আধুনিক পদ্ধতিতে মৎস খামার গড়ে তোলা হয়েছে। সখিপুর উপজেলার ৪০% মৎস উক্ত খামার থেকেই সরবরাহ হচ্ছে এবং বেশ কিছু সংখ্যক গ্রামবাসী উক্ত কর্মকান্ডে নিয়োজিত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে।
একই ভাবে বাসাইল উপজেলায় মৎস খামার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাসাইল উপজেলার বহু গ্রামবাসী কর্মকান্ডে জড়িত হয়ে জিবীকা নির্বাহ করতে পারবেন। সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা সমিতি কর্তৃক ডঃ কে.টি. হোসেন স্বর্ণপদকে ভূষিত। ১৯৬৮ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে H.S.C পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান (সম্মান) ভর্ত্তি হয়ে উচ্চতর শিক্ষা জীবন শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ভির পরই মূলত ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়ায়ে পড়ি। ১৯৬৯ সালের ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে প্রতিটি আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেন।
১৯৬৯-৭০ সেশনে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক অনুষদের (Social Science) ফ্যাকাল্টির সেমিনার সেক্রেটারী পদে নির্বাচন করে উক্তপদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়। সেমিনার সেক্রেটারী হিসেবে তদানীন্তন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগ/আওয়ামীলীগের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে বিভিন্ন সেমিনার/সিম্পোজিয়াম আয়োজন করে আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে সহায়তা করেন। বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য ও বাসাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিনি আরো বরেন, ১৯৭১ সালে মাতৃভূমিকে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর রাহুমুক্তির লক্ষ্যে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহন করি । মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সখিপুর থেকে ‘রনাঙ্গন’ শিরোনামে একটি পত্রিকা বের করি। যুদ্ধের পর চাকুরীতে যোগদান করার পরও বিভিন্ন ভাবে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তির সাথে নিবীড় সম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন সংগঠন পরিচালনায় অবদান রেখেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয় গঠিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বাংলাদেশ ব্যাংক ইউনিট কমান্ডের শুরু থেকেই কমান্ডের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত। ১৯৫১ সালে বাসাইল উপজেলাধীন কাঞ্চনপুর গ্রামে এক সমম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম। আমি ৩ পুত্র সন্তানের জনক। ৩ ছেলেই বি.সি.এস ক্যাডারের সদস্য। বড় ছেলে বি.সি.এস (বানিজ্য), মেঝ ছেলে বি.সি.এস (Economic) এবং সর্ব কনিষ্ঠ ছেলে বি.সি.এস (অডিট এন্ড এ্যাকাউন্ট) ক্যাডারের সদস্য। ছোট ভাই প্রফেসর ডাঃ আব্দুস সামাদ। তিনি দেশের খ্যাতি সম্পন্ন ডাক্তারদের মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে কিডনী বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত। তার উদ্যোগে প্রতি বছর বিভিন্ন ফিল্ডের শতাধিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে ২ বার মেডিক্যাল ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনা মূল্যে সখিপুর ও বাসাইল উপজেলার হাজার হাজার রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় থাকায় আমার নেতৃত্বে পরিবারের সকল সদস্যের সহযোগীতায় আর্থ সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার সৌভাগ্য হয়েছে। বিগত ৩৫ বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকুরীর অভিজ্ঞতা নিয়ে বর্তমানে অবসর সময়ে দেশের সেবায় আত্ম উৎসর্গ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।
বাসাইল সংবাদ/একে
সকলের অবগতির জন্য অনুগ্রহ পূর্বক নিউজটি শেয়ার করুন