নিজস্ব প্রতিবেদক : অবশেষে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক থেকে সরে দাঁড়িয়েছে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে তারা মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাস এলাকা থেকে সড়ক অবরোধ তুলে সেখান থেকে চলে যায়। এরআগে তারা দুপুর একটার দিকে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে এ সড়কে অবরোধ শুরু করে। এ সময় ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানসহ বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কোটা বাতিলের দাবি জানান তারা। বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এর আগে, দুপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে পুলিশ বাধা সৃষ্টি করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
জানা যায়, বেলা ১১টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী টাঙ্গাইল নিরালা মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় কোটাবিরোধী কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে নিরালা মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় হামলা ও ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান। এ সময় ছাত্রলীগের হামলায় তিন শিক্ষার্থী আহত হয়। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীর একটি গ্রুপ একত্রিত হয় টাঙ্গাইল পৌর উদ্যানে। সেখান থেকে তারা টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। পরে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও এম এম আলী সরকারি কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করে। এই ঘটনায় শহরে সকাল থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। তবে যেকোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তৎপর রয়েছে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য।
এদিকে, কোটাবিরোধী কয়েকশ শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে শহরে প্রবেশ করছে এমন খবরে নিরালা মোড়ে অবস্থান করা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের আশেকপুর বাইপাসে গিয়ে অবরোধ করে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, শহরে যাতে কোনও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয় এজন্য নিরালা মোড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগ। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়। তবে কারও ওপর হামলা করা হয়নি। পরে বেলা ১২টার দিকে স্থান ত্যাগ করা হয়।’
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শরফুদ্দীন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছে। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম সবুর বলেন, ‘বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা কোটাবিরোধী আন্দোলন করে। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নিয়েছিল। তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে কোনও সমস্যা নেই। তবে জনগণের ক্ষতির কারণ বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলা করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বাসাইলসংবাদ, ১৬ জুলাই, ২০২৪ / একেবি
সকলের অবগতির জন্য নিউজটি শেয়ার করুন