
বাসাইলসংবাদ: শনিবার, ৩০ জুন, ২০১৮:

নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন আজ শনিবার (৩০ জুন) অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেলে ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোটগ্রহণ।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও কৃষকশ্রমিক জনতালীগের তিন প্রার্থীর মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তবে প্রচারণায় আওয়ামীলীগের প্রার্থী এগিয়ে ছিল।
ভোট লড়াইয়ে অবতীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম আহমেদ, বিএনপির এনামুল করিম অটল ও কৃষকশ্রমিক জনতালীগের রাহাত হাসান টিপু রয়েছেন।
গত ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো বাসাইল পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মশিউর রহমান খান আপেলকে চতুর্থস্থানে রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান মেয়র নির্বাচিত হয়। ভোট লড়াইয়ে মাত্র ১৯ ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী এনামুল করিম অটল হেরে যায়। তৃতীয় স্থানে ছিল কৃষকশ্রমিক জনতালীগের সভাপতি রাহাত হাসান টিপু।
গত নির্বাচনে প্রার্থীর চেয়ে এবার প্রার্থী বাছাইয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষ ব্যক্তিকেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছেন। এ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী রয়েছে সুদৃঢ় অবস্থানে। আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল কাটিয়ে জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের সকল নেতাকর্মী একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছে প্রার্থীর পক্ষে।
তবে বিএনপি ও কৃষকশ্রমিক জনতালীগের প্রার্থীরাও রয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। সব মিলিয়ে এ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে কে হবে বাসাইলের পৌর পিতা তার জন্যে অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচনের ফলাফল পর্যন্ত।
এ এলাকার একাধিক ভোটাররা জানান, বাসাইলে এক সময় বিএনপির ঘাঁটি ছিল। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুর রহিম আহমেদ উপজেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি, উপজেলা শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর নিজের একটা ভোটব্যাংকও রয়েছে। আর এ কারণেই তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল করিম অটল ছোট বেলা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বাসাইল এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজের সাবেক ভিপি। গত নির্বাচনে অল্প ভোটের ব্যবধানে তিনি হেরে গেলেও এবার ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে অনেক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তবে নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে এসে বিএনপির কেন্দ্রীয় নীতি নির্ধারকের পক্ষ এনামুলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ায় কিছুটা হতাশ হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি।
কৃষকশ্রমিক জনতালীগের সভাপতি রাহাত হাসান টিপুকে জয়ী করতে মাঠে নেমেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম। তিনি তার জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
তবে সাধারণ ভোটাররা সন্ত্রাস, মাদক মুক্ত ও উন্নয়নশীল আধুনিক পৌরসভা গড়ার ব্যাপারে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে অবাদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষে নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং কেন্দ্র সমূহের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষে পর্যাপ্ত তদারকি কর্মকর্তা ছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে ২২ জন করে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ৫টি মোবাইল টিম, নির্বাহী ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৪টি স্টাইকিং টিম ও সাদা পোশাকধারী ফোর্স সার্বণিক দায়িত্ব পালন করবেন।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার লক্ষে ইতোমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
টাঙ্গাইল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পৌঁছে গেছে। আশা করছি বিগত বছরের মতো এবারের নির্বাচনও সুষ্ঠু এবং অবাধ হবে।’
এ নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ নির্বাচনে ১০টি কেন্দ্রে ৮ হাজার ৪৭৫ জন নারী, ৭ হাজার ৯২৫জন পুরুষসহ মোট ১৬ হাজার ৪০০জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে।
উল্লেখ্য, গত ২০১৩ সালে এ পৌরসভায় প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
বাসাইলসংবাদ/একে